তবে, জীবিকা নির্বাহ এবং অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে অনেক মানুষকেই দীর্ঘ সময় বাড়ির বাইরে থাকতে হচ্ছে। বাড়ির ভেতরে এবং বাইরে উভয় জায়গাতেই নিরাপদ থাকতে করোনাভাইরাস বিভিন্ন বস্তু এবং বাতাসে কতক্ষণ বেঁচে থাকে তা জানা জরুরি।
করোনাভাইরাস বিভিন্ন বস্তুতে কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
স্টেইনলেস স্টিল (মরিচা রোধক ইস্পাত):
- উদাহরণ: রান্নার হাঁড়ি, রান্নার প্যান, কাটলারি, সিংক, ধাতব হ্যান্ড্রেল, স্টিলের পানির বোতল, চাবি, দরজার লক, দরজার হাতল, ফ্রিজ ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ২ থেকে ৩ দিন। ল্যানসেটের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সাত দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
কপার (তামা):
- উদাহরণ: কয়েন, গহনা, বৈদ্যুতিক তার, রান্নার বাসন ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ৪ ঘন্টা।
কাঠ:
- উদাহরণ: আসবাবপত্র, তাক, খেলার সরঞ্জাম ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ২ থেকে ৪ দিন।
প্লাস্টিক:
- উদাহরণ: পানির বোতল, দুধের পাত্র, ডিটারজেন্ট বোতল, ট্রেনের চেয়ার, বাসের আসন, কাঁধের ব্যাগ, লিফটের বোতাম, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, রিমোট, সুইচ, কম্পিউটারের কি-বোর্ড, কম্পিউটারের মাউস, এটিএমের বোতাম, খেলনা ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ২ থেকে ৩ দিন।
পিচবোর্ড:
- উদাহরণ: আসবাবপত্র, শিপিং বক্স, খাবার প্যাকেজিং ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ২৪ ঘন্টা।
অ্যালুমিনিয়াম:
- উদাহরণ: খাবার প্যাকেজিং, কোমল পানীয় এর ক্যান, টিনফয়েল, পানির বোতল ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ২ থেকে ৮ ঘণ্টা।
কাচ:
- উদাহরণ: পানির গ্লাস, কাপ, আয়না, জানালা, দরজা, দেয়াল, আসবাব, টিভি স্ক্রিন, কম্পিউটার স্ক্রিন, স্মার্টফোন স্ক্রিন ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ৪ থেকে ৫ দিন।
কাগজ:
- উদাহরণ: কাগজের টাকা, চিঠিপত্র, স্টেশনারি, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র, টিস্যু, টয়লেট পেপার ইত্যাদি।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ৩ ঘণ্টা থেকে ৫ দিন।
কাপড়:
- উদাহরণ: বিভিন্ন ধরনের কাপড়, পোশাক এবং লিনেন।
- বেঁচে থাকার সময়কাল: ২ দিন।
এছাড়া মানুষের ত্বক এবং চুলেও করোনাভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে। তবে ঠিক কতক্ষণ সেটি স্থায়ী হয় সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণা হয়নি।
করোনাভাইরাস বাতাসে কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে?
কোভিড-১৯ আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি একবার কাশি দিলে আশপাশের বাতাসে ৩ হাজার ড্রপলেট ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি অনুমান করা হয় যে বায়ুবাহিত ড্রপলেটগুলো প্রায় ৩ ঘণ্টার জন্য সক্রিয় থাকতে পারে এবং এগুলো সংক্রামক করোনাভাইরাস বহন করতে পারে। এ ড্রপলেটগুলোর মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে করোনা ছড়াতে পারে, যদি তারা দুই মিটারেরও কম দূরত্বে থাকেন।
তবে, কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসেন যার ওপরে করোনাভাইরাসের ড্রপলেট পড়েছে এবং এখনও সেটি জীবাণুমুক্ত করা হয়নি তবে সেই ব্যক্তি কোভিড-১৯ দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন। এছাড়া কথা বলার সময়ও করোনাভাইরাসের ড্রপলেটগুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা করোনাভাইরাসকে প্রভাবিত করতে পারে?
করোনাভাইরাসের বেঁচে থাকার সময়কাল অবশ্যই তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার মতো কারণগুলো দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। সিডিসির তথ্য মতে, উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় নতুন করোনাভাইরাস অল্প সময়ের জন্য বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন করোনাভাইরাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রায় ৩৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় অত্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। অন্যদিকে, ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৫৮ ডিগ্রি ফরেনহাইট) তাপমাত্রায় এটি দ্রুত নিষ্ক্রিয় হয়।